![sharebazar24](https://sharebazar24.com/wp-content/uploads/2021/06/sharebazar24-logo-3.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২ | 393 বার পঠিত | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ ৭টি কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- জেমিনি সি ফুডস, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, এপেক্স ফুডস, বিআইএফসি, আরএন স্পিনিং, ঢাকা ডাইং এবং মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। এ কোম্পানিগুলোর মধ্যে কোনোটা দুর্বল অথবা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কারসাজির মাধ্যমে এসব শেয়ারের দর বাড়িয়ে নিজেদের ফাঁয়দা হাসিলে তৎপর একটি চক্র।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজ সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে জেমিনি সি ফুডের। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ৩২ টাকা ১০ পয়সা বা ৮.৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০৮ টাকা ৬০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ৩৭৫ টাকা থেকে ৪০৯ টাকা ৪০ পয়সায় উঠানামা করে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৪০ কোটি টাকা ও ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঁঞ্জিভুত লোকসানের পরিমাণ ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ৩৯.৯ পয়েন্ট। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৫১ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৬ টাকা ৫ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূলের চেয়ে ৬৭.৫৩ গুণ বেশি দরে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২১ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে-
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স : আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ২য় স্থানে অবস্থান করছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ৬.৯৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা ১০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ৪০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৪৪ টাকা ১০ পয়সায় উঠানামা করে।
বীমা খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৫০ কোটি টাকা ও ৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২০ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
এপেক্স ফুডস : কোম্পানিটি আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ৩য় স্থানে অবস্থান করছে। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ১২ টাকা ৪০ পয়সা বা ৬.৫১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০২ টাকা ৭০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ১৯০ টাকা থেকে ২০৪ টাকা ৫০ পয়সায় উঠানামা করে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ১৯৮১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ১৫ কোটি টাকা ও ৫ কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ৯২.১৪ পয়েন্ট। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৩ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ১১৭ টাকা ৯৫ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূলের চেয়ে দেড় গুণ বেশি দরে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২১ সালে ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
বিআইএফসি : কোম্পানিটি আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়সা বা ৬.০৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৮০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ২০ পয়সায় উঠানামা করে।
আর্থিক খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০০৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৪০০ কোটি টাকা ও ১০০ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঁঞ্জিভুত লোকসানের পরিমাণ ৭৬৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কোম্পানিটির কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছেনা। যে কারণে কোম্পানিটির আয় এবং সম্পদ সম্পর্কে কোন তথ্য জানা যায়নি। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০১৩ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
আরএন স্পিনিং : কোম্পানিটি আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ৫ম স্থানে অবস্থান করছে। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ৪০ পয়সা বা ৫.৫৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৮০ পয়সায় উঠানামা করে।
বস্ত্র খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৫০০ কোটি টাকা ও ৩৯২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঞ্জিভুত লোকসানের পরিমাণ ৪৪৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ রয়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৯ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূলের চেয়ে দেড় ৮৪.৪৪ গুণ বেশি দরে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
ঢাকা ডাইং : কোম্পানিটি আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় এক টাকা ১০ পয়সা বা ৫.০৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৭০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ২১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২৩ টাকা ৬০ পয়সায় উঠানামা করে।
বস্ত্র খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৩০০ কোটি টাকা ও ৮৭ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ২১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ১৫.৫৫ পয়েন্ট। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪২ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৩৫ টাকা ২১ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০১৮ সালে ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনি : কোম্পানিটি আজ ডিএসইতে সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে ৭ম স্থানে অবস্থান করছে। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় এক টাকা ৫০ পয়সা বা ৪.৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৪০ পয়সায। আজ এ শেয়ারের দর ৩৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৩৭ টাকা ৯০ পয়সায় উঠানামা করে।
বস্ত্র খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৩০০ কোটি টাকা ও ১০০ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ১৮.২২ পয়েন্ট। সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৩ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ১৯ টাকা ১৩ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২১ সালে ৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ৭টি কোম্পানির মধ্যে কোনোটা স্বল্প মূলধনী অথবা ঝুঁকিপূর্ণ এবং লোকসানী। যে কোম্পানি ১০০ কোটি টাকার বেশি মূলধন ও রিজার্ভ রয়েছে তার ডিভিডেন্ড পরিমাণ বা কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়। তবে এসব কোম্পানির দর বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে কারসাজি। একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে নিজেদের ফাঁয়দা হাসিলের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব শেয়ারের দর বাড়িয়ে যাচ্ছে। এক সময় এসব শেয়ার উচ্চ দরে বিক্রি করে বেড়িয়ে যাবে। যারা এসব শেয়ার ক্রয় করবে তারাই তাদের পুঁজিকে ঝুঁকিতে ফেলবে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত এ ধরণের কোম্পানিকে এড়িয়ে ভালো ও বৃহৎ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা।
শেয়ারবাজার২৪
Posted ৮:২৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২
sharebazar24 | sbazaradmin